একসময় সমাজতন্ত্র পরে মুজিববাদের স্লোগানে লড়াইয়ের স্লোগানের লোক মাহমুদুর রহমান মান্না খালেদা জিয়া মুক্তির লড়াইয়ের স্লোগান নিয়ে হাজির এবার। এই কথাটার বিশ্লেষণে যাওয়ার আগে কিছু কথা বলা দরকার… মান্না ভাই প্রায়শই সংগ্রাম আর আন্দোলন করে সরকারকে উড়িয়ে দেয়ার কথা বলেন বা আজ বললেন খালেদার জন্য লড়াইয়ে জীবন দেবেন।এজন্য হঠাৎই এই সংগ্রামী মানুষটির মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের কথা জানতে মন চাইলো। ১৯৬৮ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হন।কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলেন না কেন?উনার কি বয়স বা সুযোগের কমতি ছিলো?কলেজ পর্যায়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা যেখানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে অনেকে জীবনও দিয়েছে সেখানে তৎকালীন সময়ে ছাত্রলীগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক হয়ে আপনি যুদ্ধে অংশ না নিয়ে কোন গর্তে লুকিয়ে ছিলেন? এরপর ছাত্রলীগের মনোনয়নে চাকসুর জি.এস এবং সমাজতন্ত্রী ছাত্রলীগ থেকে পরে ডাকসুর ভি.পি হন।দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ছাত্ররাজনীতির জনপ্রিয়তা দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে চারিত্রিক স্খলনের জায়গাগুলো ঢেকে রাখতে পারেন নি তিনি। এবার আসি কেন তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য লড়াই এমনকি জীবন দেবেন ?!
১.জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকতে অবৈধ মার্শাল কোর্টে কর্ণেল তাহেরকে ফাঁসির পাশাপাশি জাসদের আ স ম রব,হাসানুল হক ইনু, ডা: আখলাকুর রহমানসহ অনেককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিলেও জাসদের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বেকসুর খালাস দেন। ২.পরে জিয়াউর রহমান ১৯৮০ সালে তার সাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি হালাল করতে বঙ্গভবনে সকল ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদক পর্যায়ে মিটিং করতে চাইলে অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন বয়কট করলেও মান্না ভাই জাসদ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাসদ ছাত্রলীগের পক্ষে বঙ্গভবনে এই শিক্ষানীতির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। ৩.মান্না ভাইয়ের জন্মস্থান বগুড়ায়।
এর আগে ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ নমিনেশন দেয়ার পর ভোট করে ১ লাখ ভোটে হারেন।এখন আওয়ামীলীগ থেকে বিতাড়িত হয়ে বিএনপির ছায়াতলে আশ্রয় নিয়ে চাচ্ছেন বগুড়ার নমিনেশন বাগিয়ে নিতে।বগুড়ায় বিএনপির আলাদা ভোট ব্যাংক থাকায় স্বপ্ন বুনছেন জীবনে একবারের জন্যে হলেও নামের পাশে এম.পি কথাটা লাগাতে। বিএনপি কিংবা জিয়া পরিবারের সাথে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম সেরা এই ডিগবাজের গোপন আঁতাতের সম্পর্ক উপরের ৩ প্যারা থেকেই পরিষ্কার। কিন্তু জনগণ আপনার এসব ভেল্কিবাজি বুঝে এখন।তাই খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে প্রাণ দিয়ে দেয়ার উত্তেজক ভাষণের হেতুও পরিষ্কার।এসব দিবাস্বপ্ন ছেড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেকে উপরের দিকে না উঠাতে পারলে জুতাসম নিচে নেমে যাবেন না।
লেখক:
আশরাফ সিদ্দিকি
সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি
আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান