সারাবিশ্বের মানুষ এক কঠিন সময় পার করছে। করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নামক এক অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে সবাই এখন গৃহবন্দী । এর ব্যতিক্রম হয়নি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে। এই দুঃসময়ে দেশের নিন্ম আয়ের মানুষের বড় দুঃচিন্তা হলো পরিবারের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করে সবাই মিলে খেয়ে পড়ে বাঁচা।
এমন সময়ে এই সকল কর্মহীন অসহায়দের সাহায্যে বিরল দৃষ্টান্ত রেখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ আলম ভূঁইয়া। রোজার প্রথম দিন থেকে নোয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় কর্মহীন অসহায় মানুষের মাঝে সবজি বিতরণ করছেন তিনি।
রমজানের প্রথম দিন থেকে নিজে বাজার থেকে সবজি কিনে বাসায় প্যাকেট করেন তিনি। বাসায় প্যাকেট করা সবজি নিয়ে ছুটে যান নোয়াখালী শহরের বিভিন্ন এলাকায়। এই সবজি বিতরণ কার্যক্রম শেষ রমজান পর্যন্ত চলবে বলে জানান ফিরোজ।
বিতরণ পুরো কাজ কিভাবে সম্পন্ন করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্যাকেট করা হয়ে গেলে এলাকার এক ভ্যানচালক তার ভ্যান নিয়ে আসেন। পরে সেটা নিয়ে নির্দিষ্ট এলাকা ধরে সেখানে বিতরণ করি। যাতে বেশি মানুষ একসঙ্গে জমায়েত না হয় সেজন্য ভ্যান দিয়ে ঘুরে ঘুরে বিতরণ করে থাকি।
প্রথম রোজা থেকে আজ পর্যন্ত কোথায় কোথায় বিতরণ করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ফিরোজ বলেন, প্রথম রোজায় নোয়াখালী সদরের হরিনারায়ণ পুর রেললাইনের দুই পাশের এলাকায়, দ্বিতীয় দিন অনেক বৃষ্টি ছিল সেদিন সদর এলাকায় দিয়েছি, তৃতীয় রোজায় চৌরাস্তার মোড়ে জেলখানার সামনে যেখানে অনেক রিকশা, ভ্যান ইত্যাদির পার্কিংয়ের জায়গায় ভাসমান মানুষদের মধ্যে বিতরণ করলাম এবং , চতুর্থ রোজায়, আমাদের এখানের হাউজিং এলাকায় গিয়ে সেখানে নানা ধরনের মানুষের মধ্যে এই সবজি বিতরণ করি। অর্ধ শতাধিক প্যাকেট সবজি নিয়ে গেলেও কিছুটা ঘাটতিও পড়ে যায়। তাই আজ , ২৩ রোজায়, সবজির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন এই কার্যক্রমে গিয়ে অনেকের মুখে কিছুটা হাসি ফুটাতে পারছি তার জন্য মনের প্রশান্তি কাজ করে। প্রতিদিনই এই কাজ করতে গিয়ে কিছুটা কম পরেই যাচ্ছে। ২০ রোজার দিন সবজির শেষ পর্যায়ে একজন রিকশাওয়ালা আসে, রিকশা চালালেও তিনি প্রতিবন্ধী (একটি হাতে সমস্যা)। সবজি শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে খাবার দিতে পারিনি। বিষয়টা অত্যন্ত খারাপ লাগে। পরে তাকে সবজির জন্য কিছু টাকা দিয়ে আসি। সেই খারাপ লাগা থেকে সবজির পরিমাণ বাড়িয়েছি।
নিজ উদ্যোগে ৩০ জন প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির বীজ পৌঁছে দিয়েছেন।
এছাড়াও ঈদের আগে তিনি “ঈদ উপহার” (সেমাই, চিনি, তরল দুধ এবং নুডলস) সবার কাছে পৌঁছে দেবেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, “করোনাকালে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কেউ যেন না খেয়ে থাকে সেই জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নির্দেশনায় আমার মতো ক্ষুদ্র কর্মীর পক্ষে যতটা করা সম্ভব আমি করছি এবং আগামী দিনেও তাঁর নির্দেশনায় করে যাবো ইনশাআল্লাহ।”