উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে করোনা আক্রান্ত রোগীর নমুনা পরীক্ষায় যেমন রয়েছে ধীরগতি তাতে আবার বিপুল সংখ্যক নমুনার কোন ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। যেটি বাতিল বা অপরগতা হিসেবে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধি জানান, এই অবস্থায় জেলার করোনা আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা যেমন বের হচ্ছে না অন্যদিকে আক্রান্ত ব্যাক্তির করোনা সংক্রমণ নিয়েও জনমনে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলার মোট ৩০৭টি প্রাপ্ত নমুনার মধ্যে ৯২টিই বাতিল করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ল্যাব। জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৩ উপজেলা থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট ৩২৪ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০৭ টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সংগীহিত নমুনার মধ্যে ২১৫টি ফলাফল পাওয়া গেলেও বাকি ৯২টির কোন ফল আসেনি অর্থাৎ বাতিল করা হয়েছে। সদর উপজেলার ১২৮ টি রিপোর্টের ২২ টি, লোহাগড়ার ১৪৪ টির মধ্যে ৬৭টি আর কালিয়ার ৩৫টির মধ্যে ৩টি বাতিল করেছে যশোর ল্যাব কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে লোহাগড়া উপজেলায় অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে ১৪৪ টির মধ্যে ৬৭টি নমুনাই বাতিল করা হয়েছে।স্থানীয় চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, নমুনা সংগ্রহতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তির অপ্রতুলতাই মূল বিষয়। আবার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি থাকলেও তারা সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহে কাজ করছেন না, ফলে আনাড়ি লোকদের দিয়েই নমুনা সংগ্রহ করছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। অভিযোগ আছে সিভিল সার্জন অফিসে একাধিক প্রশিক্ষিত টেকনোলজিস্ট থাকলেও তাদেরকে কাজে লাগাচ্ছেন না সিভিল সার্জন। এতে করে করোনা পরীক্ষার নমুনা কষ্ট করে সংগ্রহ করলেও তা কোন কাজেই আসছে না, উল্টো জনমনে করোনা চিকিৎসা নিয়ে হতাশা তৈরি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ করোনা নমুনা সংগ্রহ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষিত লোকবল নাই। হাসপাতালের একটি কালেকশন বুথ থেকে এবং জরুরী হলে বাইরে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বেশিরভাগ নমুনাই হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করেন। নমুনা সংগ্রহ কাজে একজন ইপিআই মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং একজন প্যাথলজি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকেন এদের সুপারভিশন করেন একজন চিকিৎসক। ইতিপূর্বে এই হাসপাতালের ৪জন চিকিৎসক এবং দুজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনা পজেটিভ এসেছে, যারা বাড়িতেই আইসোলেশনে আছেন।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.শাহাবুর রহমান বলেন, করোনা নমুনা সংগ্রহ কোন জটিল কিছু নয়। একটি ভিডিওর মাধ্যমে এটা আমরা শিখে নিয়েছি। নমুনা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমাদের কোন সমস্যা নয়। আমার মনে হয় নমুনা পাঠানোর পরে তা দেরিতে পরীক্ষার কারণে যশোর ল্যাব থেকে নষ্ট করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল মোমেন এর সাথে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনের দেহে করোনা ধরা পড়েছে, যার মধ্যে ৭ জন চিকিৎসক একজন স্বাস্থ্যকর্মী, একজন ডিসি অফিসের সিএ টু জেলা প্রশাসক। প্রথম করোনা পজেটিভি ব্যক্তি সুস্থ হয়েছেন, বাকিরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন